মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

মান্টো'র অণুগল্প: কামেল

মূল: সা'দত হাসান মান্টো
রূপান্তর: মোসতাকিম রাহী
........

লুটের মাল উদ্ধারের জন্যে অভিযান শুরু করেছে পুলিস। একের পর এক তল্লাশি চালাচ্ছে ঘরে ঘরে গিয়ে। লুটেরা লোকজন ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি রাতের আঁধারে লোকচক্ষুর আড়ালে লুটের মাল বাইরে ফেলে আসতে শুরু করলো। কেউ কেউ সাথে নিজের ঘরের জিনিসও ফেলে দিয়ে আসলো পুলিসের হাত থেকে বাঁচার জন্যে; পাছে পুলিস সেগুলোও লুটের মাল বলে তাদের ধরে নিয়ে যায়!

এক লুটেরা বড় শঙ্কিত তার দুই বস্তা চিনি নিয়ে। বস্তাগুলো সে মহল্লারই মুদির দোকান থেকে লুট করেছিলো। পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হওয়ার জন্যে সে করলো কী, খোলা জায়গায় না ফেলে মহল্লার একমাত্র কুয়োটাতে সাবধানে গিয়ে একটা বস্তা ফেলে আসলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দ্বিতীয় বস্তাটি ফেলার সময় পা ফসকে সেও পড়ে গেল গভীর কুয়োটির ভেতর। চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এলো। তাড়াতাড়ি কুয়োর ভেতর রশি ফেলে এক যুবক নেমে পড়লো লোকটাকে উদ্ধার করতে। কুয়ো গভীর হওয়ায় লোকটাকে তুলে আনতে সময় লাগলো বেশ। উপরে তোলার পর দেখা গেল পানি গিলে ডোল হয়ে আছে তার পেট। অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো গেল না। পরদিন মহল্লার লোক কুয়ো থেকে পানি উঠিয়ে অবাক হয়ে গেল। কুয়োর পানি বেশ মিষ্টি!

সে-রাত থেকেই লুটেরা মৃতের কবরে দেখা গেল মোমবাতি আর আগরবাতি জ্বলছে।
.......
(দেবনাগরী লিপিতে প্রকাশিত মূল উর্দু থেকে রূপান্তরিত)

২টি মন্তব্য:

কল্লোল লাহিড়ী বলেছেন...

খুব সুন্দর আপনার কিছুই যাবে না ফেলা। প্রথম অনুগল্পটি পড়ে ফেললাম। মান্টোর গল্পের এই অনুবাদ খুব সুন্দর। ভাষার বেগবান গতি যেন সময়ের কথা মনে করালো। ভালো লাগালো চরিত্রকে। অনেক শুভেচ্ছা রইলো আপনাকে। আরো লিখুন। ভালো থাকুন।

Unknown বলেছেন...

কল্লোল, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আমার ব্লগখাতায় চোখ বুলোনোর জন্যে। পাঠকের মতামত জানতে পেলে নিজেকে শোধরানোর সুযোগ থাকে; আর সে-পাঠক যদি হন একজন সুলেখক, তাহলে তো কথাই নেই।

আপনার নিয়মিত উপস্থতি আমাকে প্রেরণা যোগাবে।
ভালো থাকুন, এবং সুন্দর!
শুভেচ্ছা!